সেন্টমার্টিনে প্রসব সেবা না থাকায় গর্ভবতীর মৃত্যু

0
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রসব সেবা না থাকায় টেকনাফে চিকিৎসা নিতে আসার পথে মাঝ সাগরে কুলসুমা বেগম (২২) নামে এক গর্ভবতী নারী মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে দেশের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে রওনা দিয়ে টেকনাফে খালের মুখে পৌঁছলে প্রসব ব্যথা সইতে না পেরে নৌযানেই ওই নারীর মৃত্যু হয়। তিনি সেন্টমার্টিন দ্বীপ গুচ্ছগ্রামের আব্দুল শুক্কুরের স্ত্রী।

এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা এনজিও আরটিএম এর চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের এক গর্ভবতী নারী টেকনাফে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পথে মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। তবে হাসপাতালে এই নারী চিকিৎসা নিতে আসেননি। তাছাড়া এখানে গর্ভবতী নারীদের প্রসব সেবার ব্যবস্থা নাই।  এখানে এনজিও’র পক্ষ থেকে আমরা তিনজন কাজ করছি।’

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘সেন্টমার্টিন হাসপাতালে প্রসব সেবা না থাকায় এক গর্ভবতী নৌযানে করে টেকনাফ হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এখানে অত্যাধুনিক সরঞ্জামসহ হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত দ্বীপবাসী। বিশেষ করে ডেলিভারি ইউনিট না থাকায় প্রায় সময় গর্ভবতী নারীদের অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অন্তত এখানকার মানুষ যাতে চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকারগুলো পায় সে বিষয়ে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

নিহত স্ত্রীর স্বামী আবদুর শুক্কুর বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে গর্ভবতীদের জন্য চিকিৎসা সেবা না থাকায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সঠিক সময়ে তার চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন। এ দ্বীপে হাসপাতাল আছে সেটি জানি, কিন্তু কোনোদিন কেউ চিকিৎসা পেয়েছে কিনা আমার তা জানা নেই।’

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘পর্যটকদের জাহাজ চলাচল শুরুর পর থেকে সেন্টমার্টিন হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। যত দ্রুত সম্ভব সেখানে গর্ভবতী নারীদের জন্য ডেলিভারি ইউনিট চালু করার কাজ চলছে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, দ্বীপে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর শুরুতে ৭-৮ মাস স্বাস্থ্যসেবা চালু থাকলেও এরপর থেকে তেমন কোনও চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। এমনকি করোনাকালেও স্থানীয়রা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। অথচ চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার মৌলিক অধিকারের একটি। তাই দ্বীপ বাসিন্দাদের দাবি, তাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে সেন্টমার্টিনের হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করা হোক।

Share.

Leave A Reply