ক্লিনিক সিলগালা, মালিকসহ গ্রেফতার ৪

0

বৃহস্পতিবার দুপুরে অবৈধ গর্ভপাত ও পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে ক্লিনিক মালিকসহ চারজনকে গ্রেফতার এবং ক্লিনিক সিলগালা করে দেয়ার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে অবহিত করেন সিএমপির উপকমিশনার মেহেদি হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রেমের সম্পর্কের জেরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার এক নারীকে ধর্ষণ করে কথিত প্রেমিক আবুল কালাম মো. সেজান। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে মেয়েটি। এরপর তাকে ১৪ মে গর্ভপাত করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় চকবাজার এলাকায় অবস্থিত সিটি হেলথ ক্লিনিকে।

সেখানে ডাক্তার না থাকায় গর্ভপাত করান প্রশিক্ষণবিহীন নার্স বনে যাওয়া এক নারী। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটির অবস্থার অবনতি হয়। অবৈধ গর্ভপাতের বিষয়টি ধরা পড়ার ভয়ে মেয়েটিকে ভালো কোনো হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়নি। বিনা চিকিৎসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ১৫ মে বিকালে মেয়েটির মৃত্যু হয়।

ক্লিনিকে গর্ভপাত করাতে গিয়ে মেয়েটির মৃত্যু হলেও কথিত প্রেমিক মেয়ের পরিবারের কাছে প্রচার করে করোনায় তার মৃত্যু হয়েছে। পরে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওই মেয়েটির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে একেক জন একেক বক্তব্য দেন।

এতে স্বজনদের মধ্যে সন্দেহ হয়। এ ঘটনায় ১২ দিন পর মেয়ের পরিবার নগরীর চকবাজার থানায় মামলা করে। পুলিশ কথিত প্রেমিক ডবলমুরিং থানাধীন কন্ট্রাকটরবাড়ির আবুল বাসার গলির বাসিন্দা আবুল কালাম মো. সেজানকে গ্রেফতার করে।

সে আদালতে ঘটনার অদ্যোপান্ত বর্ণনা করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপর পুলিশ বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকে অবহিত করে। সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি ক্লিনিকের কোনো অনুমোদন না থাকা, প্রশিক্ষিত নার্স না থাকা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেন।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান বৃহস্পতিবার জানান, ‘গর্ভপাতে মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে স্বজনরা ১২ দিনের মাথায় চকবাজার থানায় মামলা করেন। আমরা তদন্তে নেমে দেখতে পাই এটা অবহেলায় মৃত্যু নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

মেয়েটির গর্ভপাত করানোর জন্য যারা যুক্ত ছিল, তাদের কেউ চিকিৎসক নয়। যে নার্সরা গর্ভপাতে জড়িত ছিল তাদেরও কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই।’ তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বুধবার সিটি হেলথ ক্লিনিকের মালিক হারুন অর রশিদসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকে জানানোর পর তিনি রাতে ক্লিনিকটিতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় হারুনকে হাজির করা হলে তিনি ক্লিনিক পরিচালনার কোনো অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। শুধু একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে সিটি হেলথ ক্লিনিকটি পরিচালনা করা হচ্ছিল।

পরে সিভিল সার্জন ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেন। ক্লিনিকটিতে চিকিৎসা নেয়াদের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না। সেখানে দীর্ঘদিন অবৈধ গর্ভপাত করানো হচ্ছিল। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।

Share.

Leave A Reply