প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে না করে বিদেশে চলে যাচ্ছে প্রেমিক আবছার। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিককে এসিড মেরে ঝলসে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রেমিকা মোস্তফা বেগম ও তার মা মাসুমা খাতুন। যেমন সিদ্বান্ত তেমন কাজ। ঘর থেকে ডেকে নিয়ে রাতের আঁধারে আবছারের চোখ মুখ ও বুক ঝলসে দেন মা-মেয়ে। রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের হারুয়ালছড়ি গ্রামে ১৯৯৫ সালের ২২ জুলাই সংগঠিত এই লোমহর্ষক ঘটনার মামলার রায় হয়েছে প্রায় ২৭ বছর পর। রায়ে অভিযুক্ত মা-মেয়েকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, আদালত ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মা-মেয়েকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, নারী বিবেচনায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তারা জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, একই গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আবছারের সঙ্গে মোস্তফা বেগমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে আবসারকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মোস্তফার পরিবার। কিন্তু এই প্রস্তাবে আবছারের মা-বাবা রাজি হননি। বিয়ে না দিয়ে আবসারকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ১৯৯৫ সালের ২২ জুলাই রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের হারুয়ালছড়ি এলাকায় নুরুল আবছারকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে শরীরে এসিড নিক্ষেপ করেন মা-মেয়ে। এতে আবছারের চোখ, মুখ ও বুক ঝলসে যায়। এ ঘটনায় নুরুল আবছারের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা করেন। ঘটনার পরপরই মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে মা-মেয়ের বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালে ৫ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ১৯৯৯ সালের ৮ ডিসেম্বর মা-মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরু হয়। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত গতকাল এ রায় দিয়েছেন। #
