ডানপিটে ছেলেটি এখন বিচারক

0
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট |লেখাপড়ায় ছিলেন অমনোযোগী। প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ শেষ করতেই হিমশিম খেতে হয়েছিল। পড়াশোনায় পরিবর্তন আসেনি মাধ্যমিকেও। ফলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফলাফল খারাপই ছিল। স্কুলে চতুর্থ ঘণ্টার পর পালানোটা ছিল নিয়মিত স্বভাব। এ কারণে মুখোমুখি হতে হয়েছে প্রধান শিক্ষকের শাস্তি ও জরিমানার। পুরোই ছিলেন ডানপিঠে।  কিন্তু নবম শ্রেণিতে এসে পরিবর্তন হয়ে যায় শিক্ষা জীবনের রুটিন। পড়ালেখার প্রতি তৈরি হয় তীব্র আকর্ষণ। সময়ের ব্যবধানে ডানপিঠে সেই ছেলেটি এখন বিচারক। মেধা তালিকায় ৫৬তম হয়ে সহকারী জজ/জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন মো. মাজেদ হোসাইন। চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট খাজা রোডের সিদ্দিক হাজীর বাড়ির বাসিন্দা তিনি।
মো. মাজেদ হোসাইন  বলেন, স্কুলের জয়নাল স্যার, ওসমান স্যারের কড়া শাসন এবং সময়োপযোগী নির্দেশনায় ধীরে ধীরে লেখাপড়ার উন্নতি হয়। ফলে দশম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করি। পরবর্তীতে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে সরকারি হাজী মহসিন কলেজে ভর্তি হই। কলেজে ভর্তির পর পড়ালেখার মজাটা আরও ভালো করে উপভোগ করতে থাকি।  ফলশ্রুতিতে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় চারটি ইউনিটে অংশগ্রহণ করে চারটিতেই মেধাতালিকায় স্থান পাই। কিন্তু ভর্তি হই প্রাণের আইন বিভাগে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে চেষ্টা করেছি নিয়মিত পড়াশোনা করে অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট ভালো রাখতে। ফলে প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয় হয়ে এলএলবি (অনার্স) শেষ করি। অনার্স শেষ করার পর জুডিশিয়ারির জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। অনার্সে পড়ার সময় চেষ্টা করতাম আইনের বিষয়গুলো বুঝে বুঝে পড়তে। ফলে জুডিশিয়ারির প্রস্তুতিতে আইনের বিষয়গুলো নিয়ে তেমন ঝামেলায় পড়তে হয়নি। ’ মাজেদ হোসাইন বলেন, আমি নিয়মিত টিউশন করতাম। তাই সাধারণ বিষয় যেমন- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ে মোটামুটি ভালো একটা ধারণা ছিল। সর্বোপরি মহান আল্লাহর রহমত, মা-বাবার দোয়া এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতায় প্রিলিমিনারি, রিটেন এবং ভাইভা- এ তিনটি ধাপ সফলতার সঙ্গে অতিক্রম করি। ভবিষ্যতে আমার একটাই ইচ্ছা, যেকোনো অবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

Share.

Leave A Reply