আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতার মধ্যে সংসদ সদস্যরা যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সেজন্য দেশটির প্রধান বিমানবন্দর অবরোধ করেছেন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার (১০ মে) লঙ্কান সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, কাতুনায়েকে অবস্থিত শ্রীলঙ্কার প্রধান বিমানবন্দর অবরোধ করেছে একদল তরুণ। বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশদ্বারে গাড়ি রেখে অবস্থান নিয়েছে তারা। চলমান বিক্ষোভের মধ্যে এমপিদের দেশত্যাগ ঠেকাতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, সোমবার বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ শ্রীলঙ্কায় এক এমপির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরেকজন। এদিন শ্রীলঙ্কায় অন্তত অর্ধশতাধিক রাজনীতিবিদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
শ্রীলঙ্কার পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা কলম্বো উপকণ্ঠে সরকার দলীয় এমপি অমরাকীর্তি আথুকোরালার গাড়িতে হামলা চালালে তিনি দুজনকে গুলি করেন। এতে একজন মারা যান। এরপর সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা তাকে ঘিরে ধরেন। পরে নিজের পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই সংসদ সদস্য।
এছাড়া, সোমবার রাতে হোমগমার মহাকুম্বুরা এলাকায় সংসদ সদস্য কুমারা ওয়েল্গামার গাড়িতে হামলা চালিয়েছে একদল লোক। এতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ওই এমপি।
শ্রীলঙ্কায় দেশব্যাপী কারফিউ সত্ত্বেও ব্যাপক বিক্ষোভ-সহিংসতায় সোমবার থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত সাতজন, আহত হয়েছেন দেড়শর বেশি মানুষ।
জনতার ক্ষোভের মুখে সোমবার পদত্যাগ করেছেন লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তবে তার ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
জনরোষ কতটা ভয়াবহ উঠতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাজাপাকসে পরিবার। গত রাতে তাদের পৈত্রিক বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ছাড় পায়নি মন্ত্রী সানাৎ নিশান্তার বাড়িও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, জ্বলন্ত বাড়িগুলো ঘিরে উল্লাস করছে মানুষজন। প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের চারপাশের এলাকাতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।