আবর্জনায় মলিন পতেঙ্গা সৈকত

0

পতেঙ্গা সৈকতের সৌন্দর্য দিনকে দিন মলিন হয়ে যাচ্ছে হকারদের দৌরাত্ম্যে। একসময় এ সৈকতে ‘ময়লা-আবর্জনা ফেললে হাজার টাকা জরিমানা’ সাইনবোর্ড থাকলেও তা এখন আর নেই। এমনকি যে স্থানটিতে সাইনবোর্ড ছিল সেটার নিচেই এখন ময়লার ভাগাড়। যার বেশিরভাগই ওয়াকওয়ে দখলে নিয়ে বসা দোকানগুলোর সৃষ্ট আবর্জনা। পর্যটকদের অভিযোগ আর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া খবর নিয়ে বেশ কয়েকবার হকার উচ্ছেদে অভিযানও চালায় পুলিশ। এক মাসে ১০ বার চালানো হয় এ উচ্ছেদ অভিযান। কিন্তু বার বার এ সাপ-লুডু খেলায় হেরে যায় পুলিশ। উচ্ছেদের পর পুলিশ থানায় পৌঁছানোর আগেই ফের সৈকত দখলে নিয়ে নেয় হকাররা। এমনকি দখলমুক্তের কাল স্থায়ী করতে নিয়মিত সৈকতে টহল পুলিশ মোতায়েন করেও ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। ঘুরেফিরে আবারও দখল নিয়ে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্টে লেগে পড়ে হকাররা। যা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে স্থায়ী সমাধান চাইছে খোদ পুলিশ কর্তারা। সৈকতের এমন অবস্থা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন পর্যটকরাও।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জোবায়ের সৈয়দ পূর্বকোণকে বলেন, ‘গত এক মাসে কম করে হলেও ১০ বার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। বেশ কয়েকবার সৈকত পারের দোকানগুলোর মালামালও তুলে নিয়ে এসেছিলাম থানায়। কিন্তু ফলাফল শুন্য। উচ্ছেদ করার পর আবারও শুনি দোকান বসেছে। এতে করে সৈকতের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। পুলিশের সাথে হকারদের এ সাপ-লুডু খেলা বন্ধ করতে স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজন। আশা করছি, এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ এদিকে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করে কাউকে দোকান বসাতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক কাজী হাসান বিন শামস।

তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘বিচ কমিটির সভাপতি পরিচয়ে এক ব্যক্তি এ হকার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন নেতার পরিচয় দিয়ে আমার কাছে এসে দোকান বসানোর অনুমতি চায় সে। আমি পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি, সৈকতে কোন হকার বসবে না। শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সৌন্দর্য হকারদের কারণে নষ্ট হতে দেবে না সিডিএ। এরইমধ্যে, উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সিডিএর ম্যাজিস্ট্রেটকে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

 

হকারদের নিয়ে সিডিএ’র স্থায়ী ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের দোকন বরাদ্দ দেয়া হবে। পতেঙ্গা এলাকায় সিডিএ কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত প্রায় ১.৮ একর জায়গা রয়েছে। সে জায়গায় একটি প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য বোর্ড মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এটা যেহেতু ফ্লাইং জোনের পাশে, সে কারণে প্রথমে আমাদের সিভিল এভিয়েশন সাথে বসতে হবে। দেখা যাক সিভিল এভিয়েশন আমাদের কয় তলা ভবনের অনুমোদন দেয়। যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর টেন্ডার আহ্বান করে ডেভেলপার কোম্পানির মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে ক্ষতির দোহাই দিয়ে কেউ সৈকত দখলের চেষ্টা করলে তা আমরা ব্যর্থ করে দিবো।’

Share.

Leave A Reply