নিজস্ব প্রতিবেদক
আদালতে বিচারাধীন মামলার নথি থেকে ২৮ কোটি টাকার একটি চেক সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আদালত ভবনে নানা গুঞ্জনের পর ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আজ সোমবার আইনজীবী সমিতিকে চিঠি দিয়েছেন আদালত।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর পঞ্চম যুগ্ম দায়রা জজ মো. জহির উদ্দিনের আদালতে এই ঘটনা ঘটে। ওই দিনই বিষয়টি মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতকে অবহিত করেন মহানগর পঞ্চম যুগ্ম দায়রা জজ।
আদালত সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এস এ গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এস এ রিফাইনারি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দীন আহমেদ ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন আলমের বিরুদ্ধে চেক প্রত্যাখ্যাত (ডিজঅনার) হওয়ার এই মামলাটির বাদী ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা, যার অভিযোগপত্র দেয়া হয় ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। মোট ২৭ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭২০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিএমএম আদালতে এই মামলা করেছিল।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারাধীন মামলাটির নথি দেখতে চেয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ফরিদকে অনুরোধ করেন আইনজীবী যোবায়ের মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব। নথি থেকে নোট নিয়ে তিনি আদালতকক্ষ ত্যাগ করেন। নথিটি ফেরত নিয়ে বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) কাগজপত্র ঠিক আছে কি না, যাচাইকালে দেখেন, নথির সঙ্গে সেলাই করা গোড়া থেকে মূল চেকটি কে বা কারা ছিঁড়ে নিয়ে গেছে।
সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি বিচারককে জানান আদালতের কর্মচারীরা। এর পর যোবায়েরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন তারা। জবাবে যোবায়ের আদালতের কর্মচারীদের বলেন, তাঁর জুনিয়র ভুলবশত চেকটি বাসায় নিয়ে যান। চেকটি তার কাছ থেকে বুঝে নিতে বলেন যোবায়ের।
অভিযোগের তীর যার দিকে সেই আইনজীবী যোবায়ের মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ক্লার্কের ভুলের কারণে একটা ভুল হয়ে গেছে। চেকটি ফেরত দিয়েছি।’ তিনি মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে বাদীর আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘মামলার আলামত হিসেবে থাকা চেক চুরির কথা শুনিনি। এখন জেনেছি।’ চেক চুরি হলে যাঁরা লাভবান হবেন, তাঁরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।