নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথমে সুন্দরী মেয়ে রাস্তায় দাড় করিয়ে লিফট চাওয়া চাওয়া হয় মোটরসাইকেল চালকের কাছে। চালক লিফট দিতে রাজি হলে তরুনী চালককে নিয়ে যায় নির্দিষ্ট বাসায়। তারপর বাসায় চা খাওয়ানোর কথা বলে ভেতরে ডেকে নিয়ে সহযোগীরা মিলে মোটরসাইকেলসহ সর্বস্ব লুটে নেয়।
এমনই একটি অভিনব প্রতারক চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানা পুলিশ। আজ সোমবার পাহাড়তলী থানার দক্ষিন কাট্রলি রূপালী আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে এই প্রতারক চক্রের প্রধান ওমর ফয়সাল রনি (২২) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানাগেছে, নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় একজন সুন্দরী নারী সুদর্শন যুবকের মােটরসাইকেলের কাছে গিয়ে অনুরােধ করেন তাকে একটু লিফট দেওয়ার জন্য। মােটরসাইকেল চালক সুন্দরী মেয়ে দেখে অনুরােধ উপেক্ষা করতে পারেননি। পরে ওই নারীকে লিফট দিতে গিয়ে নিজেই জিম্মিদশায় পড়ে টাকা পয়সা ও এটিএম কার্ড হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েন।
ঘটনাটি ঘটেছে, গত ১৪ ডিসেম্বর ডবলমুরিং থানাধীন মােঃ আসাদুজ্জামান সুমন নামে এক যুবকের সাথে। আজ ৪ জানুয়ারি (সোমবার) এ ঘটনায় জড়িত ওমর ফয়সাল রনি (২২) নামে একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ হাসান ইমাম। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন বক্সা আলী বাড়ির আবুল কাশেম এর ছেলে। বর্তমানে তিনি শহরের পাহাড়তলী থানাধীন দক্ষিণ কাট্টলীতে এক ভাড়া বাসায় থাকেন।
ঘটনাসুত্রে জানা যায়, সুন্দরী নারীকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতে জনৈক মােঃ আসাদুজ্জামান সুমন কে সু-কৌশলে প্রতারনার মাধ্যমে পাহাড়তলীতে নিয়ে যায় নারী। দক্ষিণ কাট্টলীস্থ প্রাণহরি দাশ রােড রুপালী আবাসিক এলাকার (হােল্ডিং নং-১৫৪৬) হাজী সােলায়মান ভবনের ৭তলায় ছাঁদের উপর নিয়া যান কৌশলে। সেখানে আগে থেকেই ছিলো সুন্দরী নারীর সহযােগীরা অবস্থান। পরক্ষণে অভিনব কায়দায় অপরাপর সহযােগীদের সাথে নিয়ে মােটরসাইকেল আরোহী যুবক থেকে সােনালী ব্যাংক এর একটি ডেবিট কার্ড, লংকা বাংলার একটি ক্রেডিট কার্ড, মিউচুয়াল ব্যাংক এর দুইটি ডেবিট কার্ড, সিটি ব্যাংক এর একটি ক্রেডিট কার্ড, ইউসিবি ব্যাংক এর একটি ডেবিট কার্ড, সিটি ব্যাংক এর একটি ক্রেডিট কার্ড, ০২টি স্মার্ট মােবাইল সেট, ২টি নরমাল মােবাইল সেট, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মােটরসাইকেলের স্মাট কার্ডসহ মােটরসাইকেলের কাগজপত্র এবং নগদ ১৭,০০০/- হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে এটিএম কার্ড হতে আরাে নগদ ১২,০০০/- হাজার টাকা উত্তোলন করে নেন।
সুন্দরী নারী ও তার সহযােগীরা জনৈক মােঃ আসাদুজ্জামান সুমন এর সব কিছু নেওয়ার পর তার মােটরসাইকেলটিও নিয়ে নেয়। পরে অচেনা স্থানে নিয়ে যুবককে ছেড়ে দেন। মােটর সাইকেল চালক লজ্জায় মান সম্মানের ভয়ে প্রথমে তথ্য গােপন করে রাখলেন। পরে থানায় এসে পুলিশকে সব জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযােগের প্রেক্ষিতে অজ্ঞাতনামা সুন্দরী নারী ও তাহার সহযােগীদের বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় ০৩(০১) ২১নং মামলা দায়ের করা হয়। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতারসহ মােটরসাইকেলটিও উদ্ধার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ঘটনার সাথে জড়িত সুন্দরী নারীসহ অন্যান্য আসামীরা চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মুল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে চম্পট দেন। জানা যায়, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের নামে সিএমপির বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এটি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।
পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ হাসান ইমাম জানান, ঘটনায় প্রতারক চক্রের সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করি শিগগিরই ধরা পড়বে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সােপর্দ করা হয়।