চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) পরিচালিত প্রায় ৪০ শতাংশ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের কোনটিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক, কোনটিতে সহকারী শিক্ষক এবং কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কলেজের প্রভাষকরাই বিদ্যালয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদানে সমস্যা হয়।
অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলে বিদ্যালয়ের দীর্ঘ পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং মানোন্নয়ন যথাযথভাবে হয় না বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তবে কিছুদিন পর পর অবসরে যাওয়ায় এসব শূন্য পদ সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তার।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও শিক্ষা শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, নগরীতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৮টি। এরমধ্যে ডাবল শিফট রয়েছে ৫টি বিদ্যালয়ে। এই ৪৮টি বিদ্যালয়ে ৪৮টি প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে কর্মরত প্রধান শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২৮ জন। বাকি ২০টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এসব শূন্য পদের বিপরীতে ১০ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ৬টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকবৃন্দ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া চারটি কলেজের প্রভাষকগণ বিদ্যালয়ের প্রধানের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধান শিক্ষকের পদের বাইরে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের অনেকগুলো পদও শূন্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একাধিক প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক না থাকলে একটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এতে একদিকে যেমন পাঠদানে সমস্যা হয়। অন্যদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্যও কোন সিদ্ধান্তে একাধিক মত দেখা দেয়। এছাড়া, ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন নিয়ে ভাবার সুযোগ পান না। রুটিন ওয়ার্ক করেই তাকে দিন পার করতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক জানান, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে সবাই যেভাবে মেনে নেয়, ভারপ্রাপ্তকে সবাই মেনে নিতে পারে না। তখন স্বাভাবিকভাবেই চেইন অব কমান্ডের প্রশ্ন দেখা দেয়। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকবৃন্দ মাঝেমধ্যে প্রতিষ্ঠানের স্বপক্ষে অনেক সিন্ধান্ত নিতে পারেন না। সহকর্মীর নেতৃত্বের প্রতি যখন পূর্ণ আনুগত্য থাকে না তখন অবশ্যই পাঠদানে নানান সমস্যা সৃষ্টি হয়। ঊর্ধ্বতনের পদ যখন অধস্তনের দেয়া হয়, সেই প্রতিষ্ঠান উন্নতির চেয়ে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে।
শূন্য পদের ব্যাপারে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, আমি প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি কয়েক মাস হয়েছে। আমার আগে যিনি প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করেছেন। আসলে কিছুদিন পর পর অবসরে যাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হচ্ছে। আমরা সেগুলো পূরণের চেষ্টা করছি।