বোয়ালখালী প্রতিনিধি।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে কলেজ ছাত্র আলমগীর ছালাম ইমন খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২৬ মে) রাতে দায়েরকৃত মামলায় উপজেলার পূর্ব চরখিজিরপুর গ্রামের নবীদুল হকের ছেলে খোরশেদ আলমকে প্রধান আসামী করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জনকে আসামী করেছেন নিহতের বোন তানভি ছালাম। গত মঙ্গলবার (২৫ মে) দিনগত রাত ১টার দিকে চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের স্নাতকোত্তর ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন জায়গা জমির বিরোধের জেরে খুন হন। ইমন পূর্ব চরখিজিরপুর গ্রামের মোবারক আলী ফকির বাড়ির আবদুল ছালামের ছেলে।ময়না তদন্তের পর ইমনের মরদেহ মঙ্গলবার বিকেলে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বাড়ির অদূরে মসজিদের পাশে রাস্তার সাথে লাগোয়া ইমনের পিতা আবদুল ছালামের ৪০ শতকের একটি জমি রয়েছেন। তিনি জমিটি ২৫ বছর আগে ক্রয় করেছিলেন। বর্তমানে জমিটি কোটি টাকা মূল্যের।
সেই জমির পাশে আবদুল ছালামের প্রতিবেশি প্রবাসী মো.খোরশেদ আলম ৮ শতক জায়গা ক্রয় করেন। এরপর থেকে আবদুল ছালামের সাথে সীমানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ৩শতক জায়গা পাবে বলে একাধিকবার শালিস বৈঠকের আয়োজন করে খোরশেদ। সেই থেকে বিরোধের সূত্রপাত।
গত মঙ্গলবার (২৫ মে) মধ্য রাতে খোরশেদ জায়গাটি দখলে নিতে বহিরাগত সন্ত্রাসী জড়ো করে। সন্ত্রাসীরা সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটর সাইকেলে ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। এতো গাড়ী ও বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা দেখে এলাকাবাসী এবং আবদুল ছালাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় খোরশেদ আলমকে জায়গা দখলে বাঁধা দেওয়া হয়। এর একপর্যায়ে বাড়ির ঘাটায় দাঁড়ানো ইমনকে টেনে নিয়ে মারধর করে হত্যা করা হয়।
জানা গেছে, এক সময় খোরশেদ তার পিতার চায়ের দোকানে বসতো। পরবর্তীতে সে বিদেশে পাড়ি জমায়। গত মাস চারেক আগে সৌদি আরব থেকে দেশে আসে খোরশেদ। দেশে এসেই খোরশেদ ৩ শতক জায়গা দাবী করে আবদুল ছালামের জায়গায় খুঁটি দেয়। এতে বাঁধা দেওয়ায় বৃদ্ধ আবদুল ছালামের পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে খোরশেদ। অভিযোগ দিয়ে শালিসের বৈঠকের মাধ্যমে জায়গা দখলের অপচেষ্টা চালায় খোরশেদ। খোরশেদের অভিযোগটি তদন্ত করছিলেন থানার উপ-পরিদর্শক ছালামত উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘খোরশেদ মূলত জিডি করেছিলেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আবদুল ছালাম ও আলমগীর ছালাম ইমনের বিরুদ্ধে চলতি মাসের শুরু দিকে আদালতে প্রসিকিউশন দেওয়া হয়েছে।’
ইমনের বোন তানভি ছালাম বলেন, ঘটনার দুইদিন পাড় হতে চলছে। এখনো ঘটনার মূল হোতা খোরশেদকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। খোরশেদ একজন প্রবাসী। গ্রেফতার এড়াতে খোরশেদ দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে তানভি বলেন,’ দ্রুততম সময়ে মধ্যে এ হত্যাকান্ডের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে বোয়ালখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, এজাহার নামীয় আসামী মোহাম্মদ সৈয়দ ও মাহবুবুর রহমান নামের দুইজনকে গ্রেফতার রয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।
প্রধান আসামী খোরশেদকে গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, যতো দ্রুত সম্ভব খোরশেদকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। সে যাতে দেশের বাইরে যেতে না পারে সে জন্য ইমিগ্রেশনে চিঠি দেওয়া হয়েছে।