বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ই্উএনও’র বাস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে চার বছর আগে। ১১ মাস আগেই হয়েছে ভাঙার টেন্ডার। ভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল উপজেলা পরিষদের সরকারি তহবিল থেকে পরিশোধ করা হয়। আবার ইউএনও’কে বেতনের প্রাপ্য অংশে বাসা ভাড়া বাবদ অর্থও পরিশোধ করছেন সরকার। তবুও বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ থেকে বার বার সংস্কার কাজ করে ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনে সপরিবারে বাস করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউএনও’র বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ চারটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৭ সালে এ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাই উপজেলা পরিষদে ইউএনও জন্য সরকারি কোনো বাসা বরাদ্দ না থাকায় সরকার তাকে প্রতি মাসে মূল বেতনের প্রাপ্য অংশে বাসাভাড়া বাবদ অর্থ পরিশোধ করে আসছে।
এদিকে ১৬-১৭ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের বরাদ্দ থেকে উপজেলা নিবার্হীর ওই ভবনে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬১১ টাকা অর্থ ব্যয়ে সংস্কার কাজ করানো হয়। এরপরও প্রতিবছর বিভিন্ন খাত থেকে সরকারি অর্থের বরাদ্দ থেকে বার বার সংস্কার কাজ করতে স্থানীয় বিভিন্ন ঠিকাদারদের বাধ্য করা হয়। এ পর্যন্ত ১০-১২ লাখ টাকার সংস্কার করা হয় ভবনটি। সংস্কার না করলে বিল আটকে রাখেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর বলে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন। এ ছাড়াও ভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল উপজেলা পরিষদের সরকারি তহবিল থেকে পরিশোধ করা হয়ে আসছে বলে উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে। অপরদিকে পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে পৌরসভার ২০১৮-১৯ অর্থ বছর থেকে দুই লাখ ৩১ হাজার ২১০ টাকা করে পৌরকর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে পটিয়া মহকুমার আওতায় তৎকালীন থানা সার্কেলে কর্মকর্তার জন্য বর্তমান ইউএনওর বাসভবনটি নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভবনটি পাকিস্তানিরা টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করে। ওই ভবনে বাঙালিদের ওপর বরবর নির্যাতন করে গণহত্যা চালায় হানাদার বাহিনী। এটিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করার দাবিও ছিল দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতা পরবর্তীতে থানা নির্বাহীর বাসভবন হিসেবে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে।
বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ১৭ সালের ডিসেম্বরে যোগদানের পর থেকে তিনি এ বাসায় বসবাস করছেন। তখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন অন্যজন। কিভাবে পরিত্যক্ত ভবনে বসবাস করছেন এর জবাব ইউএনও ভালো দিতে পারবেন। কারণ তার নামে কোনো বাসা বরাদ্দ না থাকায় সরকার তাকে ঘর ভাড়া পরিশোধ করছেন। টেন্ডার হওয়ার পরও কেন ভবনটি ভাঙা হচ্ছে না তা বুঝে উঠতে পারছি না।
বোয়ালখালীতে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম জেলার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী প্রতিপদ দেওয়ান বলেন, তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বোয়ালখালীতে। তাই বিষয়টি তিনি অবগত নন।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2020/12/05/982601এর সৌজন্যে