সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি :
সীতাকুণ্ডে নিখোঁজের তিন দিন পর যুবদল নেতা মোঃ জামশেদের (৩২) বস্তাবন্ধী লাশ উদ্ধার হয়েছে। শনিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বসরতনগর সাগর পাড়ে ভেসে আসা লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত জামশেদ উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের কমর আলী ভূঁইয়া বাড়ির নুরুজ্জামানের পুত্র। সীতাকুণ্ড থানার ওসি মোঃ ফিরোজ হোসেন মোল্লা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মুরাদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সম্পাদক মোঃ জামশেদ গত ১১ নভেম্বর বুধবার বিকেলে উপজেলার মুরাদপুর দেলীপাড়া এলাকায় অবস্থান করছিলো। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে তার আর কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার পরিবার জানতে পারে সেখানে পূর্ব শত্রুতার জেরে কিছু লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার রাতেই এ বিষয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করেন জামশেদের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী রুবি আক্তার। এছাড়া তিনি শনিবার দুপুর ১২টায় সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্বামীকে উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান। এসময় তার ভাই জয়নাল আবেদীনসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সংবাদ সম্মেলনের কিছুক্ষন পরই স্থানীয়রা উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বসরতনগর সমুদ্র উপকূলে একটি বস্তা ভেসে আসতে দেখেন। কাছে গেলে দুর্গন্ধ পাওয়া গেলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানার ওসি মোঃ ফিরোজ হোসেন মোল্লা, ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক ও এস.আই হারুন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে সেখানে উপস্থিত হয়ে জামশেদের স্ত্রী রুবি আক্তার ভাই জয়নাল আবেদীন লাশটি জামশেদের বলে সনাক্ত করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ হোসেন নিজামী বলেন, যুবদল নেতা এই জামশেদের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ছিলো। এই গ্রুপটিই এখানে যত চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির সাথে জড়িত। তার গ্রুপের এক সদস্য গত ১০ নভেম্বর জেল থেকে বের হয়ে আসলে পরদিন বুধবার সেসহ জামশেদ ও তার দলবল এলাকার কিছু যুবকের সাথে দ্বন্ধে লিপ্ত হয়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিলো। শনিবার দুপুরে লাশ পাওয়া গেছে। এদিকে সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক জানান, নিখোঁজ জামশেদের অতীত রেকর্ড ভালো না। ঐ এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ নানান অপকর্মের সাথে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে থানায় বেশ কয়েকটি মামলা আছে। সীতাকুণ্ড থানার ওসি মোঃ ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, গত বুধবার তাকে প্রতিপক্ষ অপহরণ করেছে দাবী করে জামশেদের স্ত্রী রুবি আক্তার সুনিদ্বিষ্ট ১৮ ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এরপর থেকে আমরা তাকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছি। তথ্যের জন্য দুই জনকে আটকও করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সৈয়দপুর বসরতনগর থেকে তার বস্তাবন্ধী লাশ উদ্ধার হয়। লাশটি পঁচে ফুলে গেছে।