`নীল দিগন্ত
পর্যটন কেন্দ্র
পর্যটকদের
কাছে টানছে চিম্বুক, চন্দ্র ও কেওক্রাডং
পাহাড়,
দূর সাগরের
জলরাশি আর দিগন্ত বিস্তৃত
সবুজ বন।’
দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের সমারোহের সাথে মিশে গেছে নীল আকাশ। সারি সারি পাহাড় আর প্রকৃতির অপরূপ সবুজের সমারোহে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। এত সুন্দর এই জায়গাটির নাম এ কারণেই রাখা হয়েছে নীল দিগন্ত। বান্দরবান চিম্বুক সড়কের জীবননগর এলাকায় এ পর্যটন কেন্দ্রটি। জেলা শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে এই জায়গাটি এখন কাছে টানছে পর্যটকদের। জেলা প্রশাসনের পরিচালিত এ পর্যটন কেন্দ্রটি পাশেই রয়েছে চিম্বুক পাহাড়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরি। এছাড়া রয়েছে চন্দ্র পাহাড়। উত্তরে সাঙ্গু নদী আর কেউক্রাডং পর্বতশ্রেণি। দক্ষিণে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড়। নীল দিগন্ত থেকে বঙ্গোপসাগরে জলরাশি আর তার মাঝে জাহাজগুলো দেখা যায়। বান্দরবান শহর থেকে থানচি যাওয়ার পথে অনেকেই এ জায়গাটিতে বিশ্রাম নেন। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের নীলগিরি এলাকাটিতে নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রটি বানানো হয়েছে। আপাতত এখানে রাতে থাকার ব্যবস্থা না থাকলেও সারাদিন স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ানোর পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ২০১৯ সালে বান্দরবান চিম্বুক সড়কের জীবননগর এলাকায় জেলা প্রশাসন এই পর্যটন কেন্দ্রটি নির্মাণ করে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এ জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট ওপরে। এ কারণে এই জায়গা থেকে দাঁড়ালে প্রকৃতির অপার সমারোহ খুব সুন্দরভাবেই দেখা যায়। এ পর্যটনকেন্দ্রটির উল্লেখযোগ্য দিক হলোÑ এরপাশ ঘেঁষেই চন্দ্র পাহাড় রয়েছে। এ পাহাড়টি দেখতে অনেকটা চন্দ্রপৃষ্ঠের মতোই। অসংখ্য চূড়ার পাহাড়টি ইতিমধ্যেই পর্যটকদের মন কেড়েছে। অনেকে শুধু চন্দ্র পাহাড় দেখতেই নীল দিগন্তে ছুটে আসেন। এ জায়গাটিতে ঘুরতে আসা পর্যটক দম্পতি আনোয়ার হোসেন ও মনোয়ারা বেগম জানান, দেশের মধ্যে এত সুন্দর একটি জায়গা রয়েছে তা আমাদের জানা ছিল না। কেউ নীলগিরি দেখতে আসলেই সহজে এই সুন্দর জায়গাটা ঘুরে বেড়াতে পারেন। নীলগিরি থেকে এর দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। অন্যপর্যটক রেদওয়ান চৌধুরী জানান, রাতে এখানে থাকার ব্যবস্থা করতে পারলে পর্যটন কেন্দ্রটি আরো লাভজনক হত। তবে ওই এলাকাটিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন পর্যটকরা। থানচি থেকে বেড়াতে আসা স্থানীয় পর্যটক নুমে মারমা জানান, নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর এলাকার স্থানীয় চাষীরা সেখানে তাদের উৎপাদিত নানা ধরনের ফলসহ অন্য জিনিস পর্যটকদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন। প্রায় সময়ই তারা বিকেলের বিশুদ্ধ বাতাস আর প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসতে এই জায়গাটিতে ছুটে আসেন বলে থানচি ও বলি পাড়ার লোকজন জানিয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন জানান, নীল দিগন্ত পর্যটন কেন্দ্রটি আরও সুন্দরভাবে সাজানো হবে। তিনি জানান, জেলা প্রশাসন পরিচালিত মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, প্রান্তিক লেক এসব পর্যটন কেন্দ্র ছাড়াও নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
যেভাবে যাবেন: চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানের সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। বান্দরবান শহর থেকে থানচির বাসে করে সহজেই এ জায়গাটিতে যাওয়া যায়। এছাড়া চাঁদের গাড়ি জিপে করে ও বান্দরবান শহর থেকে এই জায়গাটিতে যাওয়া যায়।