চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে ৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) পৌনে ১২টায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিক্ষোভ থেকে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ১৭ জন গুলিবিদ্ধসহ আরও ৩৫ জন আহত হয়েছে বলে দাবী করেছেন শ্রমিকরা। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
নিহতরা হলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিক মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৮), রনি হোসেন (২২), শুভ (২৪) ও রায়হান (২৫)। নিহতদের চারজনের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরেকজনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। এছাড়াও গণ্ডামারা পুলিশ ফাঁড়ির তিন সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন ইয়াসির (২৪), আব্দুল কবির ও (২৬), আসাদুজ্জামান (২৩)। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনায় ‘১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র’ যৌথভাবে নির্মাণ করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ও চীনের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে এস আলম গ্রুপের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকদের সাথে গত পাঁচদিন ধরে মালিকপক্ষের অসন্তোষ বিরাজ করছিল। বকেয়া বেতন পরিশোধ, বেতন বৃদ্ধির দাবি, শুক্রবার এক বেলা কাজ করা ও ইফতারের জন্য সময় বরাদ্দসহ ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। কিন্তু মালিকপক্ষ তাতে সাড়া না দেয়ায় আজ শনিবার সকালে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এরপর হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আগুন ধরিয়ে দেন বলে জানান বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শফিউর রহমান মজুমদার জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহত চারজনের লাশ আনা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া জানান, বাঁশখালী থেকে ৭ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে দুপুর ১টায় একজনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অন্যান্য আহতদের অবস্থাও আশংকাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য এর আগে ২০১৬ সালে একই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানীয়দের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হন।