দেশে তামাকের ব্যবহার কমাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কিছু দুর্বলতা থাকার কারণে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা এবং এবিষয়ে করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরতে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা’র একটি প্রতিনিধি দল আজ সোমবার ০৪ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে। এসময় তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ধাপে ধাপে কঠোরতা আরোপ করা হবে। ইতিপূর্বে তামাকপণ্যের প্যাকেটে ছবি ব্যবহার ছিলনা, সেটি করা হয়েছে। পাশাপাশি একসময় বিমানসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে ধূমপানের সুযোগ ছিল। আইন করে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনটি আরো যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আইনের সংশোধনী আনা হচ্ছে। এসময় তিনি প্রজ্ঞা এবং আত্মা’র প্রস্তাবসমূহ আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বসহকারে বিবেচনার করবেন বলে আশ্বাস দেন।
বৈঠকে প্রজ্ঞা এবং আত্মা’র পক্ষ থেকে ১. ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্ত সহ সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা; ২. বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; ৩. তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা; ৪. বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; ৫. ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টস (এইচটিপি) এর মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টসমূহ আমদানি ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; এবং ৬. সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধিসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ প্রভৃতি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা হয়। উল্লেখ্য, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী, বাংলা ট্রিবিউন এর বিজনেস ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম এবং প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মসূচি প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার।