বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক/স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লিখে বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে পুলিশ তাকে গুলি করে। এর পর থেকে দিনটি ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবেও পালিত হয়ে আসছে।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টি দিনটিকে ‘গণতন্ত্র দিবস’ হিসেবে পালন করবে। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাষণ দিয়ে সামরিক আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা স্মরণে দিবসটি পালন করছে তারা।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর নূর হোসেন ছাড়াও যুবলীগের আরেক নেতা নূরুল হুদা বাবুল এবং কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো শহীদ হন। নূর হোসেনের এ আত্মদান স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। তার আত্মাহুতির ধারাবাহিকতায় আন্দোলন আরও বেগবান হয়। অবশেষে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এসব বাণীতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের বীর শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন তারা।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে শহীদ নূর হোসেন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের জন্য দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শহীদ নূর হোসেন-আমিনুল হুদা টিটো দিবস উপলক্ষে বাম গণতান্ত্রিক জোট সকাল ৮টায় নূর হোসেন স্কয়ারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে।
যুবলীগের কর্মসূচিতে রয়েছে সকাল ৯টায় নূর হোসেন চত্বরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, পৌনে ১১টায় জুরাইন কবরস্থানে শহীদ নূর হোসেনের কবর জিয়ারত এবং দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ। এ ছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জেএসডি, শহীদ নূর হোসেন সংসদ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও মোটরচালক লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।