সব জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির নূর হোসাইন কাসেমী।
রোববার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় আয়োজিত সম্মেলনে তাঁকে আমির নির্বাচিত করা হয়।
সম্মেলনে নায়েবে আমীর নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক ড. আহমদ আবদুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে আগের পদে বহাল রাখা হয় আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে। প্রচার সম্পাদক করা হয় জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে। আর যুগ্ম মহাসচিব করা হয়– জুনায়েদ আল হাবীব, মওলানা মামুনুল হক, নাসির উদ্দিন মনির, মীর ইদ্রিসকে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা হারুন ইজহার।
সম্মেলনে মোট ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। উপদেষ্টা কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন ২৫ জন, নায়েবে আমির পদে ৩২ জন, যুগ্ম–মহাসচিব পদে সাতজন ও সহকারী মহাসচিব পদে ১৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।
দেশ জুড়ে আলোচিত চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সারাদেশ থেকে হেফাজতের প্রায় ৪ শতাধিক নেতা অংশ নিয়েছেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রামের আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলন শুরু হয়।
সম্মেলনের শুরুতে হেফাজতের আগের কমিটি বিলুপ্ত করে সাবেক সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে আহবায়ক করে ১২ সদস্যের সম্মেলন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। তাদের পরিচালনায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সর্বসম্মতিক্রমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক, হেফাজতের সাবেক মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরীকে হেফাজতের আমীর এবং হেফাজতের সাবেক ঢাকা মহানগর সভাপতি জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীতে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে হাটহাজারী মাদ্রাসা ও আশেপাশের এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সম্মেলনে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন কেবল তাদের ভাষায় নির্ধারিত ‘শীর্ষ মুরুব্বীরা।‘ এর বাইরে শত শত নেতাকর্মী হাটহাজারী মাদরাসার অভ্যন্তরে ও আশপাশে অবস্থান নেয়।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফির ইন্তেকালের পর হেফাজত আমীরের পদ শূণ্য হওয়ায় নতুন আমীর নির্বাচনের জন্য এ সম্মেলন আহ্বান করা হয়।
প্রতিষ্ঠার দশ বছর পর প্রথমবারের মত আয়োজিত এই সম্মেলনকে ঘিরে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনার পাশাপাশি ছিল নানা শংকাও।
এদিকে হেফাজতের প্রথম কমিটির যুগ্ন মহাসচিব মাঈনুদ্দীন রুহী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দাবি করেন, আজকের সম্মেলন গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। গত কমিটির প্রায় ৫০ জন সদস্য আজকের সম্মেলনে দাওয়াত পায়নি। তাই আমরা এ কমিটি মানিনা। আমরা বসে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করবো। #