ঢাকা : করোনার মধ্যেই দেশে ডেঙ্গু আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ছে। এ সময়ে নতুন করে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি নগরবাসীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনেই ২৪০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসার জন্য দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত অক্টোবর পুরো মাসে আক্রান্ত হয়েছিল ১৬৩ জন।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রনজীত দাস চৌহান নামের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্র রোববার (১৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মারা গেছে।
রনজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায়।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ২১ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৮৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার ডেঙ্গুর ব্যাপারটি তেমন আমল না দেবার কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে। কারণ, এটা অজ্ঞাত কোনো বিষয় ছিল না।
জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের নেতা ডাক্তার ফাইজুল হাকিম বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চলছে। কখন কেন এটা বাড়ছে তা সরকারের অজানা নয়। তবে সরকার সেটা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই, করোনার মাঝে আবার ডেঙ্গুর প্রকোপে জনগণ আতঙ্কিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মশার ব্যাপারে পারিবারিক পর্যায়ে সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি জ্বর দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, রোগীকে প্রচুর পানি বা তরল খাবার দিতে হবে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর মতে, রাজধানীতে গত কয়েক সপ্তাহে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এডিস মশার প্রজনন বেড়েছে। ফলে এডিসবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপও বেড়েছে। অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন।
সরকারি হিসাব মতে, চলতি বছর ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৮৬৭ জন। এদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৭৮ জন।