চট্টগ্রাম, ১৬ নভেম্বর ২০২০ : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বিদেশী তহবিলে পরিচালিত প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সোমবার (১৬ নভেম্বর) টাইগারপাসস্থ বাটালী হিলের কর্পোরেশনের কনফারেন্স রুমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (এলআইইউপিসি) প্রকল্পের সেটেলমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট ফান্ড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া অবহিতকরণ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান। কর্মশালায় কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন খান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে টাউন ম্যানেজার ৫টি কসপোন্যান্টে প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে জানিয়ে বলেন, দরিদ্র মানুষদের সংগঠিত করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। তাদের জীবনমানের উন্নয়নে ব্যবসায় ও শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ প্রয়াস। তবে শহরের দরিদ্র মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের ক্ষেত্র কম। এরপরও ই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ লাখ মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ চলবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক এলআইইউপিসি প্রকল্পের কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়িত হবে সেই ধাপগুলোর সচিত্র প্রতিবেদনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি তাদের প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও আইন মানার দৃষ্টান্তকে শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করা যায় বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের এখানে যেকোন প্রকল্প বা ঋণের টাকা নয়-ছয় করার সংস্কৃতি চালু আছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ইউকেএইড, ফরেন কমনওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিইউ) এর অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
নাগরিক সেবা নিশ্চিতে চেষ্টা করছি : সুজন
প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, আমি সাময়িক সময়ের জন্য কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছি। ১২’শ কোটি টাকার দেনার বোঝা নিয়ে কর্পোরেশনের রুটিন কাজের পাশাপাশি নগরীর নাগরিক সেবা নির্বিঘ্ন করতে বিগত দিনগুলোতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছি। এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন অফিসের অব্যবস্থাপনা দুর ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে দেখি নগরবাসী নানান সমস্যা নিয়ে হাজির হচ্ছেন। কিন্তু সব সমস্যার সমাধান আমার একার পক্ষে এ সীমিত সময়ে করা সম্ভব নয়।
তিনি সোমবার (১৬ নভেম্বর) টাইগারপাস বাটালী হিলস্থ কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে লেকসিটি হাউজিং সোসাইটির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
এ সময় কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, লেকসিটি হাউজিং এর সভাপতি এ কে এম মুজিবুল হক, সাধারণ সম্পাদক আফাজ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে লেকসিটি হাউজিংয়ের সাধারণ সম্পাদক বিগত সময়ে টাকা প্রদানের পরও অল্প কয়েকটি প্লট ছাড়া বাকি মালিকদের প্লট বুঝিয়ে না দেয়ার বিষয়ে প্রশাসককে অবহিত করেন। এসময় তারা তাদের বিগত সময়ে প্রদেয় টাকার হিসেবসহ বর্তমানে প্লটের রেজিস্ট্রি খরচ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশাসককে জানান ।
প্রশাসক সুজন তাদের কথা শুনে বলেন, আপনাদের সাথে অতীতে যা হয়েছে তা অন্যায়। এটা কাম্য ছিলোনা। এ সমস্যা সমাধান করার জন্য আমার আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে। আমি এ সমস্যার সমাধানে দু-একদিনের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর বরাবরে পত্র প্রেরণ করে ওনার নির্দেশনা চাইবো। মন্ত্রণালয় যা বলবে, সেই মতে ব্যবস্থা হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি আমার দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কর্পোরেশনের অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্য তহবিলের টাকা অল্প অল্প করে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতাও যথা সময়মতো দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। কয়েকদিন পূর্বে নগরীর খাল থেকে ৮৫ ট্রাক আবর্জনা অপসারণ করেছি।
তথ্য বিবরণী/সাইফুল/রাজ্জাক