বোয়ালখালীতে আওয়ামী লীগ নেতার জমি দখলের চেষ্টা, সাংবাদিক গেলে গণধোলাইয়ের হুমকি

0

বোয়ালখালী প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি জবর দখলে নিতে বেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে কয়েকজন ব্যক্তি সরকার দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ সাংবাদিকদের গণধোলাই দিয়ে মারার হুমকিও প্রদান করেন তারা। অভিযুক্ত জনার্দ্দন চৌধুরী রঘু উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বলে জানা গেছে। আজ শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সকালে উপজেলার পশ্চিম শাকপুরায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বোয়ালখালী থানা পুলিশ।

জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা এলাকার বিজয় ধরের ওয়ারিশদের দখলীয় সম্পত্তি দখলে নিতে সরকার দলীয় লোকজনের নাম ভাঙিয়ে পার্শ্ববর্তী ওঁকার চৌধুরী (৫৭), জনার্দ্দন চৌধুরী (৫৫) ও অরিন্দম চৌধুরীর (৫৩) দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। শুক্রবার সকালে লোকজন নিয়ে ওই সম্পত্তিতে পিলার দিয়ে কাঁটা তারের ঘেরাবেড়া দিতে গেলে তাতে বাধা দেন বিজয় ধরের ওয়ারিশ মৃদুল চৌধুরী। তাদের বাধা দেওয়ায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা মৃদুল চৌধুরীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে ঘেরাবেড়া অব্যাহত রাখে। এ ঘটনায় মৃদুল চৌধুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, ২০-২৫ লোকজন নিয়ে বিরোধীয় সম্পত্তিতে কাঁটাতারের ঘেরাবেড়া নির্মাণ করছে। এ সময় উপস্থিত অরিন্দম চৌধুরীসহ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে ঘেরাবেড়া নির্মাণ করছেন। কয়েকজন ব্যক্তি তাদের সরকার দলীয় নেতা পরিচয় দেন। এ সময় তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে গণধোলাই দিয়ে মারার হুমকি দেয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা দখল করার নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এরকম নির্দেশ দেওয়ার সুযোগই নেই।
মৃদৃল চৌধুরী জানান, আমাদের ৮৬ শতক সম্পত্তি দখলে নিতে দীর্ঘদিন ধরে অপচেষ্টা করে আসছে পার্শ্ববর্তী কয়েকজন ব্যক্তি। সম্প্রতি এ সম্পত্তি আমাদের নামে নামজারি করে সরকারি খাজনা পরিশোধ করলে তারা এ সম্পত্তি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। শুক্রবার জোরপূর্বক ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের সম্পত্তিতে ঘেরাবেড়া দিতে চেষ্টা চালায়। এতে বাধা দেওয়ায় তারা আর কোনোদিন আমাকে জায়গায় দেখলে প্রাণ মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করেছে।
জনার্দ্দন চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সবজি চাষাবাদ করেছি, তা সংরক্ষণের জন্য ঘেরাবেড়া দিয়েছি। সাংবাদিকদের গণধোলাই দিয়ে মারার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি বলা ভুল হয়েছে।
থানার উপ-পরিদর্শক মো.ছালামত উল্লাহ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিরোধীয় সম্পত্তিতে ঘেরাবেড়া নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার জন্য বিবাদীদের বলেছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের হুমকির বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হুমকীর ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন।
কেএ ফারজানা/কেকণ্ঠ
Share.

Leave A Reply