আর একটি স্প্যান বসলেই পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু

0
সাইফুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ : স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সব শেষ স্প্যানের আগেরটি বসানো হলো। ফলে ছয় কিলোমিটার সেতু এখন দৃশ্যমান। ১৫০ মিটারের আর একটি স্প্যান বসলেই পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে সেতুটি। শুক্রবার বেলা ১১টার কিছু আগে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের উপর ৪০তম স্প্যান বসানো হয়। সকাল ১০টার দিকে শুরু হয় এই কর্মযজ্ঞ। পিলারের উপর সেটি বসাতে এক ঘণ্টার মতো সময় লেগে যায়।
আর একটি স্প্যান বসলেই পদ্মা সেতু
বৃহস্পতিবারই স্প্যানটিকে নির্দিষ্ট দুটি পিলারের কাছে নোঙর করে রাখা হয়। ৩৯তম স্প্যান বসানোর সাত দিনের মাথায় এ স্প্যানটি বসানো হয়।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের জানিয়েছেন, বাকি স্প্যানটি বিজয় দিবসের আগেই বসানো হবে।
যেভাবে বসানো হলো স্প্যান :
অঘ্রাণের ভোর ছিল কুয়াশায় ঘেরা। প্রমত্তা পদ্মাও ছিল শান্ত। স্পিডবোটে করে পদ্মা সেতুর দিকে যাওয়ার সময় কুয়াশার আড়ালে থাকা সেতুকে দেখা যাচ্ছিল না। কাছে যেতে দেখা যায় ১১ এবং ১২ নম্বর পিলারের সামনে স্থির দাঁড়িয়ে বিশাল এক ক্রেন। সেটাতেই ঝুলছিল পদ্মা সেতুর ৪০ তম স্প্যান। সকাল ১০টার দিকে ক্রেনটি নড়েচড়ে উঠল। এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের চেষ্টায় সঠিক অবস্থানে বসানো হলো স্প্যানটি।
নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, এরপর পরই শুরু হবে ওয়েল্ডিং এর কাজ। দুই দিনের মধ্যেই শেষ হবে তা। তারপর শুরু হবে আরও কিছু প্রকৌশলগত কাজ। যেসব পিলারের স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জোরেশোরে চলছে রেল পথ এবং সড়ক নির্মাণের কাজ।
স্প্যানের ওপর অংশে কাজ :
কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
সেতুর কর্মীরা জানান, মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বসানো স্প্যানগুলোতে রেলওয়ে ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে। সেতুতে প্রয়োজন হবে দুই হাজার ৯২৭টি রোড স্ল্যাব। এর মধ্যে নভেম্বর পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ২৩৯টির বেশি।
অপরদিকে রেলওয়ের জন্য প্রয়োজন হবে দুই হাজার ৯৫৯টি রেল স্ল্যাব। এ পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৮৬০টির বেশি।
২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে সেতুর মূল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন ২০১৮ সালের মধ্যে সেতুর নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়।
আর একটি স্প্যান বসলেই পদ্মা সেতু
২০১৭ সালের শেষ দিকে এসে বসানো হয় প্রথম স্প্যান। শুরুতে তিন চার মাস পর পর স্প্যান বসানো হতো। তবে ২০১৮ সাল থেকে বদলে যায় পরিস্থিতি। প্রতি মাসে একাধিক স্প্যান বসাতে সক্ষম হয় সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।
সবশেষ ২০২১ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের মার্চে করোনার হানায় আবার ধীরগতি তৈরি হয় কাজে। যদিও তা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে।
Share.

Leave A Reply