উপমহাদেশের প্রথম নারী শহীদ চট্টগ্রামের সন্তান প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনী অবলম্বনে নির্মিতব্য চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’র তৃতীয় লটের শুটিং চলছে এখন প্রীতিলতার জন্মস্থান চট্টগ্রামে। ইতিমধ্যে তৃতীয় লটের এই শুটিং চলছে চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে। গত ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শুটিংয়ের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব ও পটিয়া উপজেলার ধলঘাট এলাকায়।
ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণ নিয়ে নির্মিতব্য এই চলচ্চিত্রের প্রীতিলতা চরিত্রে অভিনয়ে অংশ নিচ্ছেন দেশের খ্যাতিমান অভিনয় শিল্পী নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাস চরিত্রে থাকছেন মনোজ প্রামানিক।
স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বিপ্লবীদের যে বিস্ময়কর ও সাহসিকতাপূর্ণ অভ্যূত্থান ঘটেছিল, সেই ইতিহাসকে ধারণ করে নির্মিত হচ্ছে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’ অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’। সরকারের ২০১৯-২০ অর্থবছরের সরকারি অনুদানে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ভালোবাসা প্রীতিলতা চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করছেন প্রদীপ ঘোষ, প্রযোজনা করছেন রিফাত মোস্তফা।
চলচ্চিত্রের নির্বাহী প্রযোজক রিফাত মোস্তফা বলেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব ছিল বহু আগেই এ ধরণের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া। উপমহাদেশের প্রথম নারী শহীদ প্রীতিলতার জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে ছোটবেলা থেকেই আমার বাবা ও মায়ের কাছ থেকে গল্প শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। অনেক দেরিতে হলেও পৃথিবীতে এই প্রথম ভালোবাসা বীরকন্যা প্রীতিলতা চলচ্চিত্রটি নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। আমি মনে করি চট্টগ্রামের সকল মানুষের এই মহৎ কাজটিতে এগিয়ে আসা উচিত।’
নির্মিতব্য ছবিটিতে প্রীতিলতার বাবা চরিত্রে খ্যাতিমান নাট্যকার ও অভিনেতা মান্নান হীরা। কিশোরী প্রীতিলতা মৃন্ময়ী রূপকথা। সূর্য সেন চরিত্রে কামরুজ্জামান তাপু, কল্পনা দত্ত চরিত্রে ইন্দ্রানী ঘটক, নির্মল সেন চরিত্রে অমিত রঞ্জন দে, মনোরঞ্জন চরিত্রে সুচয় আমিন, ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট চরিত্রে পাশা মোস্তফা কামাল, ইংরেজ অফিসার চরিত্রে মিজান রহমান, আহমেদ আলী, নাজমুল বাবু, সুধাংশু তালুকদার, বিপ্লবীদের সহায়তাকারী চরিত্রে আরিফুল ইসলাম হাবিব, মনিশ কাকা চরিত্রে পংকজ মজুমদার, পিসি চরিত্রে তামিমা তিথী।
চলচ্চিত্রটির পরিচালক প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘ঐতিহাসিক স্থানগুলোতেই আমাদের শুটিং পরিচালনা করছি। যে গ্রামগুলোতে বিপ্লবীরা ত্রিশের দশকে তাদের লড়াই পরিচালনা করেছেন আমরা সেই সব গ্রাম গুলোতেই শুটিং করছি। ইতিমধ্যে পাহাড়তলীতে অবস্থিত ইউরোপিয়ান ক্লাবে হামলার দৃশ্য ধারণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ঐতিহাসিক ধলঘাট যুদ্ধের দৃশ্য ধারণের কাজ চলছে। আমরা চাই নতুন প্রজন্মের কাছে এই চলচ্চিত্র ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকুক।’