বিশ্বকে বারবার কাঁপিয়ে দিয়েছে যেসব মহামারী!

0

অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের জেরে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালি। মৃতের সংখ্যার নিরিখে চীনকেও টপকে গিয়েছে সে দেশ। তার পরই রয়েছে স্পেন। ইতালিকে এখনও টপকাতে না পারলেও চীনকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে পড়েছে ইউরোপের এই ছোট্ট দেশ।

জটিল হচ্ছে আমেরিকা

স্পেনের পাশাপাশি ক্রমশ জটিল হচ্ছে আমেরিকার পরিস্থিতিও। আমেরিকায় করোনার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠছে অন্যতম বড় শহর নিউ ইয়র্ক। আমেরিকায় আক্রান্ত ৬০ হাজারের বেশি। শুধুমাত্র নিউ ইয়র্কেই আক্রান্ত প্রায় ৩০ হাজার।

বিশ্বজুড়েই আতংক

এমন অবস্থায় বিশ্ব জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে এখনও ততটা থাবা বসাতে না পারলেও এ দেশের মতো ঘনজনবসতিপূর্ণ দেশের অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিত্সকেরা।

আগে যেসব মহামারি

তবে শুধু কোভিড ১৯-ই নয়, এর আগেও নানা সময়ে নানা রোগের প্রকোপে কেঁপে উঠেছে বিশ্ব। বার বারই পৃথিবার বুকে ফিরে ফিরে এসেছে মহামারি-অতিমারির ‘অভিশাপ’।

দুই শ’ বছরে বার বার
কলেরা: গত ২০০ বছরে বারে বারেই মহামারির আকার নিয়ে ফিরে এসেছে কলেরা। ১৮১৭ সালে প্রথম এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তারপর তা সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক হাজার ভারতীয় এবং ব্রিটিশের মৃত্যু হয়।

সাত বার কলেরা মহামারি

এ ভাবে সাতবার মহামারির আকার নিয়ে এ বিশ্বে ফিরে এসেছে কলেরা। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছিল ষষ্ঠ কলেরা মহামারি। ১৮৯৯ সালে। শুধুমাত্র ভারতেই সে বার মারা গিয়েছে 8 লক্ষ মানুষ। পশ্চিম ইউরোপ, রাশিয়া, উত্তর আফ্রিকাতেও ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল কলেরা।

১০ লাখ মরে হংকং ফ্লুতে
হংকং ফ্লু: ১৯৬৮ সালের ১৩ জুলাই প্রথম হংকং-য়ে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। মাত্র দু’মাসের মধ্যেই এই ভাইরাস ভারত, ফিলিপিন্স, উত্তর অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপে পৌঁছে যায়। তার পর জাপান, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা-সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে খুব কম সময়ের মধ্যেই। এর জেরে ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এশিয়াটিক ফ্লু: হংকং ফ্লু ছিল সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসেরই একটা ধরন। ভাইরাস তাদের জেনেটিক পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্রমে আরও ভয়াবহ আকার নিয়ে থাকে। এই এশিয়াটিক ফ্লু বা রাশিয়ান ফ্লু-ও তাই।

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে ১০ লাখ

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এইচ৩এন৮ হিসাবে এটাকে চিহ্নিত করেন গবেষকরা। ১৮৮৯ সালে এই ফ্লু-র প্রকোপে সারা বিশ্বে ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। রাশিয়ার বুখারাতে প্রথম এই রোগ দেখা যায়। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে তা আরও দ্রুত অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

অ্যান্টোনিন প্লেগে ৫০ লাখ

অ্যান্টোনিন প্লেগ: ১৬৫ থেকে ১৮০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রকোপ ছিল এই রোগের। রোম সাম্রাজ্যে প্রথম এর প্রকোপ পড়ে। তবে বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে পড়েনি। রোমেই সীমাবদ্ধ ছিল। সে সময় এটাকে গুটি বসন্ত বা হাম বলে মনে করা হয়েছিল। প্রাচীন রোমে ৫০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এই রোগে।

প্লেগ অব জাস্টিনিয়ানে আড়াই কোটি

প্লেগ অব জাস্টিনিয়ান: রোমান রাজা প্রথম জাস্টিনিয়ানের রাজত্বকালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। ৫৪১ থেকে ৫৪২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় এই রোগ। মূলত এক ধরনের কালো ইঁদুর থেকেই তা ছড়িয়েছিল। যার ফলে বিশ্বে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের মৃত্যু হয়।

এইচআইভি/এইডসে সাড়ে তিন কোটি

এইচআইভি/এইডস: ১৯৭৬ সালে কঙ্গোতে প্রথম দেখা গিয়েছিল। তবে তখনই তা অতিমারির আকার নেয়নি। অতিমারির আকার নিয়েছিল ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আফ্রিকা। এই রোগের ফলে সারা বিশ্বে এই সময়কালের মধ্যে সাড়ে তিন কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

স্প্যানিশ ফ্লুতে পাঁচ কোটি

স্প্যানিশ ফ্লু: মৃত্যু সংখ্যার নিরিখে ইতিহাসের অন্যতম ভয়ানক রোগ। সারা বিশ্বে ৫০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ কোটি মানুষের। এটাও এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ফ্লু ছিল। ১৯১৮ সালে স্পেন থেকে সারা বিশ্বে এই রোগ ছড়িয়েছিল বলে গবেষকদের অনুমান।

ব্ল্যাক ডেথে ২০ কোটি

দ্য ব্ল্যাক ডেথ: ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক রোগ। এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী ২০ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কালো ইঁদুর থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৩৪৬ সালে এশিয়ার দেশগুলোয় প্রথম থাবা বসিয়েছিল এই রোগ। তার পর অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

Share.

Leave A Reply