চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, সরকারই সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। সরকারই বেশির ভাগ মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করে থাকেন। অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তেমনটাই মনে করা হয়। কিন্তু শুধু বাংলাদেশেই নয় বরং, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই সরকারি চাকরি পাওয়াটা যেন একটা স্বপ্ন।
দেশটির অধিকাংশ মানুষই সরকারি চাকরির পেছনে হন্যে হয়ে ঘোরেন। কোনভাবে একটা সরকারি চাকরি পেয়ে গেলে যেন আর কোনো চিন্তাই থাকে না। অন্য কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এতগুলো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে না। যা সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। তিনি আজ ৪ জানুয়ারী সোমবার চট্টগ্রামে সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইপসা আয়োজিত বিভাগীয় পর্যায়ে ‘গভার্ন্যান্স সেলফ অ্যাসেসমেন্ট’ (জিএসএ) বিষয়ক পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও ফেলো ড. কাজী মারুফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইপসার চীফ এক্সিকিউটিভ মো. আরিফুর রহমান। কৃষ্ণ কুমার শাহ’র পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ডাইরেক্টর নুসরতা সুলতানা, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক শফিকুল ইসলাম, ইউএনডিপির রিপ্রেজেন্টেটিভ আশেকুর রহমান। আলোচনা সভায় জাতীয় সুশাসন মূল্যায়ন কাঠামো ও বিভাগীয় পর্যায়ে গভার্ন্যান্স সেলফ অ্যাসেসমেন্ট বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশমালা তৈরি করা হয়। এছাড়া বিভাগীয় নগরীর পাশাপাশি অন্যান্য জেলায় সুষম উন্নয়ন বৈষম্যের অন্তরায়গুলো নিয়েও আলোকপাত করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিজানুর রহমান আরো বলেন, আমলাতন্ত্রের বিরোধীতার কারণেই সুশাসন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আমলার ভিতরে থেকেই আমলাতন্ত্রের বিরোধীতা করে যাচ্ছে কেউ কেউ। এটা সুশাসনের বড় অন্তরায়। অন্যদিকে দুর্নীতির রাহুগ্রাস রাষ্ট্রের প্রাণশক্তিকে নিঃশেষ করে। আমাদের দেশে অব্যাহত দুর্নীতি রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে। দুর্নীতির কারণে রাষ্ট্রের সম্পদের অপচয় হয়, বণ্টনে অসমতা সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। এজন্য জনসচেতনতা অপরিহার্য। তা সুশাসনের চাবিকাঠিও বটে। জনগণ সচেতন না হলে, সরকার প্রশাসনযন্ত্র স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে প্রযুক্তির কাছে যেতে হবে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল না মেলালে পিছিয়ে পড়তে হবে। একটি দেশের জন্য প্রযুক্তি আশীর্বাদ। একসময় লাল ফিতার দৌরাত্ম্য ছিল। এখন দেশে ই-নথিতে কাজ চলছে। গ্রাম পর্যায়ে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে। সরকারের উন্নয়ন খাতগুলোয় নির্দিষ্ট সময়ে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। করোনাকালে বিশ্বে যখন মন্দাভাব বিরাজ করছে, তখন দেশের অর্থনৈতিক সূচক ভালো অবস্থানে রয়েছে। সুশাসনের জন্য সবাইকেই পজিটিভ চিন্তা করা দরকার। সভায় সিভিল সার্ভিস, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি, বিভিন্ন পেশাজীবী গোষ্ঠী, তরুণ উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করে।