সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ

0
সঠিক সময়ে মহামারি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটকে আগামী কয়েক মাসের জন্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। চুক্তির আওতায় ভারতের এই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বাংলাদেশের করোনার ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেরামের ভ্যাকসিনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। এছাড়া তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। আমরা সব জায়গা থেকে আশ্বাস পেয়েছি। যেহেতু চুক্তি হয়েছে আমরা ভ্যাকসিন পাবো।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের কাছ থেকে করোনার ভ্যাকসিন পেতে তাদের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি হয়েছে এবং আজকে যে আলোচনা হয়েছে তাতে আমরা এখনো আশাবাদী। আশা করছি, এ চুক্তি ব্যাহত হবে না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপনারা যা জেনেছেন আমরাও তা জেনেছি। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না, আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে, থাকবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভারতে অনুমোদিত এই ভ্যাকসিন এখন ডব্লিউএইচওর কাছে আবেদন করবে, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তারা অনুমোদন পাবে। এরপর তারা আমাদেরকে জানাবে আমরা কবে পাব।’
চুক্তির প্রতি আমাদের আস্থা আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তির প্রতি আমাদের আস্থা আছে। এ বিষয়ে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত উনারা কেউ নেগেটিভ বলেননি।’
ভারত ছাড়াও ভ্যাকসিন পেতে বিকল্প কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেকের সঙ্গেই কথা হচ্ছে। এর মধ্যে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা তাদের ট্রায়ালে আছে। অনুমোদন হলে এ বিষয়ে আমরা সামনের দিকে আগাবো।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ব্রিফিংয়ে আসেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান।
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় দূতাবাস থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে যে, ভারত সরকার ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ করেছে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সরকারি পর্যায়ে। এখানে কোনো বাধা নেই। এ জন্য চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক অর্থ (১২০ মিলিয়ন ডলার) আজই (সোমবার) পরিশোধ হয়ে যাবে। মন্ত্রী ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন।’
গত ৫ নভেম্বর অক্সফোর্ড উৎপাদিত ‘কোভিডশিল্ড’ ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ পেতে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এই উদ্যোগের আওতায় প্রথম ধাপের ছয় মাসের প্রতি মাসে বাংলাদেশকে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা ছিল সিরামের।
গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়াল্লা বলেন, ‘গত রোববার ভারতীয় নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু শর্ত হলো, ঝুঁকিতে থাকা ভারতীয় জনগণের জন্য ডোজ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য রফতানি করতে পারবে না সিরাম ইনস্টিটিউট।’
গত ১ জানুয়ারি দেশটিতে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল ভারত। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বিবেচনায় ভারতের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়।
ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশেও এ ব্যাপারে আশা দেখা দিয়েছিল। চলতি জানুয়ারিতেই ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা জানিয়েছিল দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
Share.

Leave A Reply