রাঙ্গুনিয়ায় স্মার্ট কার্ড নিতে ভোগান্তি, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

0

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি : রাঙ্গুনিয়ায় স্মার্ট কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) নিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, দীর্ঘ লাইনে ভিড়ের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে মানুষ দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে এই ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের । করোনাকালীন এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে জনসমাগমের ওপর নানা বিধিনিষেধ থাকলেও স্মার্ট কার্ড বিতরণে তা মানা হচ্ছে না। এমনকি নির্বাচন কার্যালয় থেকেও কোন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই, মাস্কও পড়ছেন না অধিকাংশ মানুষ। এতে স্মার্ট কার্ড বিতরণে ভোগান্তির পাশাপাশি চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।
সরেজমিন উত্তর রাঙ্গুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করার সময় দেখা যায়, প্রচুর মানুষ কার্ড সংগ্রহের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। স্কুলের নির্ধারিত কক্ষের ভিতরেও মানুষের ভিড়। কার্ড সংগ্রহে আসা ব্যক্তির হাতের চাপ ও চোখের আইরিশ নিতে গিয়েও কক্ষের মধ্যে রীতিমতো ভীড় জমে যাচ্ছে। কার্ড নিতে আসা অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক, স্বাস্থ্যবিধিও মানছেনা কেউ।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, নির্বাচন অফিসের লোকবল সংকট ও সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতার কারনেই কার্ড নিতে আসা মানুষগুলো দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
কার্ড নিতে আসা দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কুলছুমা বেগম (৫২) বলেন, “সকাল ৭ টায় এসেছি, বেলার ১১ টার পরও হাতের চাপ দিতে পারিনি। প্রথম লাইনে দাড়িয়ে প্রথমে টোকেন সংগ্রহের পর দ্বিতীয় লাইনে দাড়িয়ে হাতের চাপ ও চোখের আইরিশ দিতে হবে। অন্য লাইনে দাড়িয়ে কার্ড নিতে হবে। কখন ঘরে ফিরতে পারব জানিনা। ”
জেসমিন আক্তার নামে এক গর্ভবতী নারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ অসুস্থ ও বৃদ্ধদের জন্য কোনো রকম বিশেষ ব্যবস্থা রাখেনি কর্তৃপক্ষ। সকাল ৭টায় এসে লাইনে দাড়িয়েছি। কিন্তু কয়েক ঘন্টা লাইনে দাঁিড়য়েও টোকেন নিতে পারিনি।”
নাম প্রকাশে অনৈচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, কক্ষের ভেতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় ব্যক্তি আর্থিক সুবিধা নিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে স্মার্ট কার্ড দিচ্ছেন। ”
মো. সোলায়মান নামে এক চাকুরীজীবী বলেন, চট্টগ্রাম শহর থেকে ছুটি নিয়ে কার্ড নিতে বাড়িতে এসেছি। লাইনে দাঁিড়য়ে টোকেন নেয়ার কার্ড নিতে গেলে গিয়ে জানতে পারি কার্ড আসেনি।
উপজেলা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. মোশাররফ বলেন, “ এতগুলো মানুষের মাঝে কার্ড বিতরণ করতে একটু সমস্যা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অরুণ উদয় ত্রিপুরা বলেন, “ সবাই একসাথে কার্ড নিতে আসায় কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যদি একটু সহযোগিতা করতো তবে এই সমস্যা নিরসন হতো। স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষদের মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যসতেন থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু এসব মেনে চলার প্রবণতা কারো কাছেই নেই”।
উল্লেখ্য, রাঙ্গুনিয়ায় ৬ মার্চ থেকে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হয়, চলবে ২৬ জুন পর্যন্ত। উপজেলায় ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫’শটি স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। ২০০৭ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যারা ভোটার হয়েছেন তাঁরা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে এবং ২০১৯ সালে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন তারা ভোটার স্লিপ দিয়ে স্মার্টকার্ড নিতে পারবেন।

Share.

Leave A Reply