রাঙামাটিতে এক যুগেও চালু হয়নি করোনারি ইউনিট

0

রাঙামাটি প্রতিনিধি : পাহাড়ের জনগণকে হৃদরোগের চিকিৎসা সুবিধা দিতে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের পাশে ২০০৯ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল হৃদরোগ চিকিৎসার করোনারি কেয়ারি ইউনিট। এই ইউনিটের জন্য পাঁচতলা একটি ভবন তৈরি করা হলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকটে নির্মাণের প্রায় এক যুগেও চালু করা যায়নি করোনারি কেয়ারি ইউনিট। এদিকে সহসাই করোনারি কেয়ারি ইউনিটে স্বাস্থ্যসেবা শুরু করারও কোন আশ্বাস দিতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।

রাঙামাটিতে হৃদরোগীদের জন্য করোনারি কেয়ারি ইউনিট বড় একটি আশির্বাদ হয়ে দেখা দিলেও নির্মাণের এক যুগেও বিভাগটি আলোর মুখ দেখেনি। কবে ইউনিটটি চালু হবে- তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।
পাঁচতলা এই ভবনটি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার পর ২০১৪ সাল থেকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এদিকে মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি না হওয়ায় এই ইউনিটে চিকিৎসা সেবা শুরু নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। দীর্ঘ সময় পরও হৃদরোগের চিকিৎসা সেবা চালু না হওয়ায় পাহাড়ের জনসাধারণ সংক্ষুব্ধ।
দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি রাঙামাটি’র সাধারণ সম্পাদক ললিত চন্দ্র চাকমা বলেন, ‘সরকারের এত টাকা খরচ করে করোনারি সেবার সুযোগটি তৈরি করার পর যখন এটি চালু না হয়, তখন এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। সরকারের টাকা অপচয় ছাড়া আর কিছু না। এটি যেন অচিরেই চালু করে রাঙামাটিবাসীকে স্বাস্থ্য সেবায় আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায় সেদিকে সরকারের সুদৃষ্টি আশা করবো।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান বলেন, ‘সমাজে যারা বিত্তশালী তারা হয়তো করোনারি চিকিৎসার জন্য রাঙামাটির বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ সেই সুযোগটা পাচ্ছে না। করোনার এই সময়টাতে অনেক বেশি কাজে দিত যদি করোনারি ইউনিটটি চালু করা হতো। নির্মাণের এত বছরেও কেন সেটি চালু করা গেল না, সে বিষয়ে আরও একবার ভেবে দেখা উচিত কর্তৃপক্ষের।’
এই মুহূর্তেই করোনারির এই ইউনিট চালুর সম্ভাবনা দেখছেন না রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল আরএমও ডা. শওকত আকবর। তিনি বলেন, ‘এটি চালুর জন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসক টিম যেমন প্রয়োজন তেমনি সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্রয়োজন। এগুলো সব একসাথে হলে এই ইউনিটটি চালু করা সম্ভব। তার মধ্যে এই ভবনগুলোতে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মেডিকেল কলেজ যখন নিজস্ব ক্যাম্পসে চলে যাবে তখন হয়তো আমরা বিষয়টি চালু করার দিকে এগোবো। আপাতত বিষয়টি চালুর বিষয়ে কোন সরকারি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না।’
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন, ‘আমাদের এখানে করোনারি কেয়ার ইউনিট তৈরি করা হয়েছিল ২০০৯ সালে। কিন্তু তখন প্রয়োজনীয় লোকবল, যন্ত্রপাতি সংকটাসহ নানা কারণে ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হয়নি। ২০১৪ সালে মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভবনটিতে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চালু জন্য হস্তান্তর করা হয়, তারই প্রেক্ষিতে এখনো ভবনটিতে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলছে। যেহেতু ভবনটি আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, মেডিকেল কলেজের নিয়ন্ত্রণাধীন সেহেতু আমাদের পক্ষে এই ভবনে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়। তবে ২৫০ শয্যার যে ভবনটি তৈরি করা হচ্ছে সেখানে আইসিইউ, সিসিইউ সুবিধা রাখার জন্য প্রস্তাবনা রয়েছে।’(cvoice24.com)

 

Share.

Leave A Reply