চট্টগ্রামে ঝাউতলা রেলগেটে ডেমু ট্রেনের সঙ্গে অটোরিকশা ও মিনিবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে তিনজন নিহতের ঘটনায় বাসের চালক মো. শহিদুল আলম ও গেটম্যান আশরাফুল আলমগীর ভূঁইয়াকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন রেলওয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি।
গত ৯ ডিসেম্বর জমা দেয়া পাঁচ পৃষ্ঠার ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন দায়িত্বে থাকা গেটম্যান আশরাফুল আলমগীর ভূঁইয়া ঝাউতলা রেল ক্রসিংয়ের একপাশে ব্যারিয়ার ফেলেননি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করেছে কমিটির সমস্যরা। পাশপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটতে সুপারিশটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে প্রতিবেদনে বাসচালক শহিদুল আলমকে সংঘর্ষের জন্য দায়ী করা হয়েছে। বর্তমানে বাসচালক শহিদুল আলম ও গেটম্যান আশরাফুল আলমগীর ভূঁইয়া কারাগারে আছেন। গেটম্যান আশরাফুলকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা ঘটনার একদিন পরই তদন্তের কাজ শুরু করেন। ভিডিও ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেন। তদন্তে দুর্ঘটনার জন্য বাসচালক শহিদুল আলমকে বেশি দায়ী করেছেন। কারণ তিনি দ্রুত বেগে গাড়ি চালিয়ে আসেন।
অন্য তিনটি গাড়িকে ধাক্কা দেন। বাসচালক যদি বেপরোয়া গতিতে গাড়ি না চালাতেন তাহলে দুর্ঘটনা ঘটত না। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনায় গেটম্যানের অবহেলা ছিল। তিনি সড়কের এক পাশে ব্যারিয়ার ফেলেননি। কমিটি এ জন্য গেটম্যান আশরাফুল আলমগীর ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি নেওয়ার সুপারিশ করেছে। ভবিষ্যতে রেল লেভেল ক্রসিং এলাকায় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য কয়েকটি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বাসচালক বেপোরোয়া গতিতে এসে তিনটি গাড়িকে ধাক্কা দেয়। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণে থাকলে এ দুর্ঘনায় তিনটি প্রাণ যেতো না। পুরো ঘটনা তদন্ত করে ৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে রেলওয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি।
উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে রেল স্টেশন থেকে একটি ডেমু ট্রেন ছেড়ে আসে। এ সময় রেলক্রসিংয়ের বার না ফেলার কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পোটি একটু এগিয়ে ছিল। পেছন থেকে একটি বাস দ্রুত এসে গাড়ি দুটিকে ধাক্কা দিয়ে রেললাইনের ওপর উঠিয়ে দেয়।
তখন দ্রুতগতির ট্রেনটি ধাক্কা দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পোকে অনেকটা দূরে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ট্রাফিক উত্তর বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল মনির উদ্দিন ও সিএনজি যাত্রী সৈয়দ বাহাউদ্দিন আহমেদ ও কলেজ শিক্ষার্থী সাতরাজ উদ্দিন শাহীন নিহত হয়। এছড়া সিএনজি -টোরিকশার যাত্রীসহ আরও ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।