বিয়ে সামাজিক ধর্মীয় অনুশাসনের একটি। এতে পুরুষের অনুশাসন চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। এমন এক সময় ছিল যেখানে সংসারে পুরুষদের কথাই শেষ কথা ছিল। কিন্তু যুগের ব্যবধানে পাল্টেছে এই চিত্র। শুধু পুরুষরাই নয়, সংসারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো এখন নারীরাও নিয়ে থাকে। প্রেমের বিয়েতে এই কর্তৃত্ব বেশি থাকে নারীদের হাতে, এমনটাই বলছেন একদল গবেষক।
সম্প্রতি গবেষকদের এক সমীক্ষার ফলাফলে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুরুষদের কপালে। সংসারে ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে পুরুষদের দাপট, এমনটাই দাবি করছে গবেষকরা।
ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাপ্লায়েড ইকোনমিক রিসার্চ অ্যান্ড ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউটের মঞ্জিষ্ঠ ব্যানার্জি অশ্বিনী এস দেশপাণ্ডে সংসারে স্বামী-স্ত্রীর প্রভাব নিয়ে এক গবেষণা চালান। প্রায় ২১ হাজার বিবাহিত নারী এবং তাদের স্বামীদের নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়।
গবেষণায় অংশ নেন ২০০৪-০৫ সালের বিবাহিত দম্পতি এবং ২০১১ ও ২০১২ সালের মধ্যে বিবাহিত নব দম্পতিরা। জিজ্ঞাসাবাদের শুরু হয় এই সমীক্ষা। ‘কার কথা বেশি মানা হয় পরিবারে’ এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসা করা হয়। দেখা গেছে, বর্তমানে সংসারে স্ত্রীদের দাপটের কথাই বেশি উল্লেখ করেছে নববিবাহিতরা। যার তুলনায় পুরোনো দম্পতিরা জানিয়েছেন, সংসারে এখনো পুরুষদের দাপটই বেশি।
এর কারণ নিয়েও বিস্তারিত গবেষণা চালানো হয়। যার বেশির ভাগই দেখা গেছে, প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের হলে নারীদের মতামতের জোর বেশি থাকে সংসারে। এ ক্ষেত্রে এসব নারী নিজেই বেছে নিয়েছিলেন নিজেদের জীবনসঙ্গীকে।
অন্যদিকে যারা পরিবারের সিদ্ধান্ত মেনে বিয়ে করেছিলেন তাদের সংসারে পুরুষদের কথার দামই সর্বোচ্চ।
গবেষণায় স্বামী-স্ত্রীর বয়সের তফাতটাও উঠে এসেছে। স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর বয়সের তফাত বেশি হলে সমস্যাটাও বেড়ে যায়। যেমন, স্ত্রীয়ের বয়স যদি ২৫ হয়, সেখানে স্বামীর বয়স যদি ৩২ হয়। তাহলে যেকোনো বিষয়ে মতামতে স্বামীর মতামতই প্রধান থাকে। আবার স্ত্রীর বয়স যদি ২২ হয় আর স্বামীর বয়স হয় ২৯ বছর, তবে স্ত্রীর সিদ্ধান্ত বা মতামতই হয় চূড়ান্ত।
বিশেষ ক্ষেত্রে এই ফলাফলে কিছুটা তারতম্য হতে পারে। গবেষণা বলছে, স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধার জায়গাটা ঠিক থাকলে, মানসিকতা যদি ইতিবাচক থাকে সে ক্ষেত্রে সংসার জীবনটা আরো সুন্দর হয়ে ওঠে।
Share to TwitterShare to PinterestShare to LinkedInShare to Email