তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খৃষ্টান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে এইদেশ রচিত হয়েছে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। শান্তির দেশে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে কেউ যেন শান্তি বিনষ্ট করতে নাপারে সেজন্য সবসময় সবাইকে সেব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রাংলাদেশ রচিত হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল ও পক্ষ আছে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে পূঁজি করে রাজনীতি করে। তারা নির্বাচন আসলে সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেয়, আওয়ামী লীগকে গালাগাল করে বলে আমরা হিন্দুদের দল। আমরা সব মানুষের দল, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টান সব মানুষের দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা জেএম সেন হল থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহাশোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী মহাশোভাযাত্রা উদ্যাপন পরিষদের আহবায়ক শ্রী মাইকেল দে এর সভাপতিত্বে মহাশোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি শ্রী সুকুমার চৌধুরী প্রমূখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা সময়ে সময়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা চালায়। এই সাম্প্রদায়িক উসকানি যখনই যারা দিয়েছে আমাদের সরকার সবসময় কঠোরহস্তে দমন করেছে। আর নির্বাচনের সময় যারা সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেই, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করার অপচেষ্ঠা চালায়, মধুর মধুর কথা বলে, তাদেরকে আপনারা চিনেন। সুতরাং সময় আসলে তাদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকার বিনীত অনুরোধ জানাই।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমনাদের মনে আছে, গত দূর্গাপুজার সময় কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, আমি সেদিন অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। পরেরদিন আমি নিজে ছুটে গিয়েছি রংপুরে। কারণ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি রংপুর এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত। এভাবে দেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়া হয়।
আমাদের দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টান সবার মিলিত রক্তস্্েরাতের বিনিময়ে এই দেশ রচিত হয়েছে। এই দেশ আপনাদের, আপনারা কেউ হীনমন্যতায় ভুগবেননা। এই দেশের মাটিতে আপনারা জন্মগ্রহন করেছেন, কেউ আঘাত হানলে প্রতিরোধ করবেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি, আওয়ামী লীগ আপনাদের পাশে থাকবে, সরকার আপনাদের পাশে আছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, শোভাযাত্রা সহকারে জন্মাষ্টমী উদ্যাপন চট্টগ্রামে যেভাবে হয় বাংলাদেশের আর কোথাও এভাবে হয়না। ছোটবেলা থেকে এই উৎসবে আমিও সামিল হয়েছি। চট্টগ্রাম ছাড়াও এই উৎসব অনেক জায়গায় হয়, কিন্তু এরকম জৌলুসপূর্ণ উৎসব কোথাও হয়না। সুতরাং চট্টগ্রামের এই অনুষ্ঠান অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান। জাতীয় অনুষ্ঠান বলেই গতকাল প্রধানমন্ত্রী এখানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে যখন দূগাপুজা হয় এই শহরে কেউ বিমানে কিংবা বাসে আসলে বুঝতে পারে এই শহরে একটি উৎসব চলছে। ঢাকাসহ অন্যশহরে সেটি বুঝা যায়না। এজন্য চট্টগ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়েেক নিয়ে আমি গর্ব করি। কারণ আমরা চট্টগ্রামের মানুষ নিজেদের দশ টাকা থাকলে আরো দশ টাকা ধার করে খরচ করি। সেইজন্য আমাদের উৎসব অন্যান্য যেকোন জায়গার তুলনায় অনেক বেশি হয়।
এরপর দুপুরে তথ্যমন্ত্রী চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জেলার জঙ্গল সলিমপুর ও তৎসংলগ্ন মৌজাসমূহের খাস জায়গায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নিমিত্তে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভা শেষে সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ৩২০জন রোগীদের মাঝে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করেন তথ্যমন্ত্রী।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উপস্থিত ছিলেন। #