চট্টগ্রামে কারবালার স্মরণে তাজিয়া মিছিল

0
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কারবালার স্মরণে তাজিয়া মিছিল করেছে চট্টগ্রামের শিয়া ইমামিয়া ইশনা আশারা সদরঘাট ইমামবারগাহ। ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদাত বরণ উপলক্ষ্যে ১০ মহররম দিনটি শিয়া মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শোক আর মাতমের দিন।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বেলা পৌনে ১১টার দিকে নগরের সদরঘাট ইমাম বাড়ি থেকে শোক মিছিল বের হয়। মাওলানা আমজাদ হোসেন এতে নেতৃত্ব দেন। এ সময় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
শিয়া মুসলিমদের শোহাদায়ে কারবালা স্মরণ কর্মসূচি ১০ মহররম আশুরা পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না হলেও ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদাত বরণের এই দিনটি তাদের জন্য সবচেয়ে বড় শোকের দিন। করোনার দুই বছর শোক জুলুস বন্ধ থাকার পর এবার আবারও হায় হোসেইন হায় হোসেইন স্লোগানে মেতে উঠে শিয়া ভক্তদের মধ্যে। প্রতিবারের মতো চট্টগ্রাম নগরের রাস্তায় আশুরার শোক ছড়িয়ে দিতে এদিন ‘মার্সিয়া জুলুস’ নিয়ে বের হয়েছিলেন শিয়া ইমামিয়া ইশনা আশারা জামাত।
আশুরার দিন বেলা ১১টায় শত শত মানুষের ভিড়ে বিশাল মাসায়েব মজলিশ অনুষ্ঠিত হয় সদরঘাট হোসাইনিয়া ইমামবারগাহে। মাসায়েব মজলিশে ইয়াজিদী বাহিনীর হাতে ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার সঙ্গীদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের মর্মস্পর্শী বর্ণনা তুলে ধরেন পেশ ইমাম মাওলানা আমজাদ হোসাইন।
এ সময় শত শত নারী-পুরুষের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে সদরঘাট ইমামবারগাহের বাতাস। স্মরণ করা হয় কারবালায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা। ‘হোসাইন ইয়া হোসাইন’ বলে বুক চাপড়ে মাতম করতে থাকেন আবেগাপ্লুত মানুষজন। মাঝে মাঝে আবার হায়দারি হাঁকে প্রকম্পিত হতে থাকে চারপাশ। পেশ ইমামের বক্তব্য শেষ হতে না হতেই হাত তুলে ‘লাব্বাইক ইয়া হোসাইন’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন সবাই।
এরপরই ‘আলাম’ ও ‘তাবুত’ সহকারে মার্সিয়া জুলুস (শোক মিছিল) নিয়ে রাস্তায় নামেন পুরুষ আজাদারেরা। মুসলিম উম্মাহকে কারবালার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিতে যুগ যুগ ধরে এসব প্রতিকৃতির ব্যবহার করেন শিয়া মতাবলম্বীরা। এসময় বুক চাপড়ে সমবেতভাবে মার্সিয়া গাইতে থাকেন তারা। মার্সিয়া জুলুসটি কালিবাড়ি রোড হয়ে নিউমার্কেট পৌঁছালে সেখানে পথচারীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন শিয়া নেতা মাওলানা আমজাদ হোসাইন। এ সময় তিনি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
এ সময় তিনি বলেন, হয়রত মোহাম্মদ (সা:) সারাজীবন অসত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। তার সেই পথ অনুসরণ করে কাজ করে গেছেন তার দৌহিত্র ইমাম হোসাইন। কিন্তু কারবালার প্রান্তরে তাকে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়েছে। তার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার শক্তি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পরস্পরের প্রতি ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রেখে যত কঠিন বিপদই আসুক না কেন অসত্যের সঙ্গে আপস না করে সংগ্রাম করে যেতে হবে।
ধর্মের নামে যারা সহিংসতা ছড়ায় তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তারা বলেন, সারা বিশ্বে মুসলিমদের উপর যে নির্যাতন হচ্ছে তা বন্ধে মুসলিম দেশগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
মিছিলটি নগরের নিউমার্কেট, জিপিও, কোতোয়ালি মোড় ঘুরে আবার সদরঘাট ইমামবাড়ায় ফিরে আসে।
Share.

Leave A Reply