কওমি মাদ্রাসায় রাজনীতি নিষিদ্ধ— নিয়ন্ত্রণ হারালো হেফাজত

0
কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। বৈঠকে কওমি অঙ্গনে বিরাজমান অস্থিরতা থেকে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা এবং ওলামায়ে কেরামের মান বজায় রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ধর্মীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়। 

স্থায়ী কমিটির সভায় কওমি আলেমরা ৬টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেগুলো হলো— কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ব্যতীত পৃথকভাবে কওমি মাদ্রাসার বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না। এ সিদ্ধান্তের ফলে কওমি মাদ্রাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের কর্তৃত্ব দৃশত চলে গেল। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে

রবিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় সংস্থাটির স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

হাইআতুল উলইয়ার অফিস সম্পাদক মু. অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন ৫ বোর্ডের ৫ (পাঁচ) জন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে ৫ জন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত ৫ (পাঁচ) জন সমন্বয়ে ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসার যে সব নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লীদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, রমজানের এই রহমতের মাস বিবেচনায় সরকারের কাছে তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।

রমজানের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়ার জন্য এবং রমজানের পর কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়।

এদিকে আল-হাইআতুল উলয়ার সভার সিদ্ধান্ত সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। সদস্যরা হলেন— মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।

সভায় আল-হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি ওয়াক্কাসের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীসহ বিশ্বমানবতার জন্য দোয়া করা হয়।

বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গার সভাপতি মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মহাসচিব মাওলানা শামসুল হক, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা সুলতান যওকের প্রতিনিধি মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, মাওলানা আব্দুল হালীম বুখারীর প্রতিনিধি মাওলানা উবায়দুল্লাহ হামযাহ, আযাদ দীনী এদারায়ে তা‘লীম এর সভাপতি মাওলানা জিয়াউদ্দীন এর প্রতিনিধি মাওলানা এনামুল হক, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর, তানজীমুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা মুফতি আরশাদ রাহমানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুস এবং জাতীয় দ্বীনী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের প্রতিনিধি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মহাসচিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী। (সিভেয়স)

Share.

Leave A Reply