পচা পেঁয়াজে সয়লাব চট্টগ্রামের বাজার

0

পচা আর মানহীন পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে গেছে চট্টগ্রামের বাজার। ব্যবসায়ীদের গুদাম আর আড়তে বস্তায় বস্তায় নষ্ট পেঁয়াজের মজুদ। এসব পেঁয়াজের অনেকগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে ডাস্টবিনে আবার কিছু পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে।

ভ‌্যান গাড়িতে পেঁয়াজ বিক্রেতারা ২০০/৩০০ টাকায় নষ্ট পেঁয়াজের বস্তা কিনে সেগুলো থেকে বাছাই করে কিছু ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি করছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে। পুরোপুরি ভালো মানের পেঁয়াজের মূল্য কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকার নিচে মিলছে না।

শনিবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ এবং অন্যান্য বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তদার এবং চাক্তাই ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান খালেদ জানান, পেঁয়াজের সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে গত কয়েকমাসে হাজার হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। চাহিদার বিপরীতে অতিরিক্ত আমদানির ফলে আমদানিকারকদের গুদাম এবং আড়তদারদের আড়তে হাজার হাজার বস্তা পেঁয়াজ মজুদ হয়ে আছে। এ ছাড়া গণহারে পেঁয়াজ আমদানির ফলে মানহীন পচা পেঁয়াজও আমদানি হয়ে এসেছে জাহাজ ভর্তি হয়ে। এর ফলে নষ্ট পেঁয়াজে এখন বাজার সয়লাব। দেশীয় ভালো মানের পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হলেও আমদানিকৃত মানহীন পেঁয়াজের মূল্য ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক জানান, গত ৪ মাসে মিয়ানমার, চায়না, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে আরও কয়েক হাজার টন পেঁয়াজ। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতে একমাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এর ফলে ‍বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ জাহাজে কন্টেইনারেই নষ্ট হয়ে যায়।

এই আমদানিকারক জানান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কন্টেইনারে আমদানি করা পেঁয়াজ অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় ডগা গজিয়ে যায়, আবার সাধারণ কন্টেইনারে আমদানিকৃত পেঁয়াজ পচে যায়। উভয় সংকটের কারণে এবার পেঁয়াজ আমদানিকারকারা বড় অংকের লোকসানের মুখোমুখি হয়েছেন।

এদিকে, খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী ও আমদানীকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পেঁয়াজ কেজিতে আমদানি খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মান নষ্ট ও পচে যাওয়ায় সেসব পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি করতে হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য এখনো ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

চট্টগ্রাম নগরীতে ভ্যান গাড়িতে বহন করা পেঁয়াজ বিক্রেতা রহিম উল্লাহ জানান, তিনি খাতুনগঞ্জ থেকে পচা পেঁয়াজের বস্তা কিনেছেন ২৫০ টাকা দরে। সেই বস্তা থেকে বাছাই করে কিছু ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৩০ টাকা কেজি দরে। একটি পচা পেঁয়াজের বস্তা থেকে ১০ থেকে ১২ কেজি মোটামুটি খাবার উপযোগী পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান। এর ফলে এক বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করে তাদের ১০০ টাকা মতো মুনাফা হচ্ছে।

চট্টগ্রামের বহদ্দার হাট বাজারের খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আবদুল সবুর বলেন, বাজারে ভালো মানের দেশী পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিশরের বড় সাইজের পেঁয়াজের মূল্য ৩০ টাকা কেজি। এছাড়া মিয়ানমার, চায়না, পাকিস্থানসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য ৩৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।- রাইজিংবিডি

Share.

Leave A Reply